গরুটা সারাজীবন দড়িতে বাঁধা



গরুটা সারাজীবন দড়িতে বাঁধা



গরুটা সারাজীবন দড়িতে বাঁধা,

কখনো দড়িটা বাড়ে কমে বা রঙ পালটায়।



জীবনের শুরু থেকে চিতা অবধি সময়টা

কয়েকটি ভাগে ভাগ করে দেওয়া।

শৈশব, বাল্য, কৈশর, যৌবন ও বার্ধক্য তাদের নাম।

প্রত্যেকটি ভাগের দড়ির দৈঘ্য সীমিত।

তার বাইরে যাওয়া মানেই সমাজের ভ্রুকুটিশুধু।

গরুটা সারাজীবন দড়িতে বাঁধা,

কখনো দড়িটা বাড়ে কমে বা রঙ পালটায়।



শৈশবের দড়িটা বড্ড ছোট, মাত্র উঠান পর্যন্ত।

তাও আবার মায়ের হাতে শক্তভাবে ধরা।

বাল্য আর কৈশরের দড়ি দীর্ঘ কিন্তু জীবন গড়ার সময়।

ও দড়ি ছিড়লেই জীবনের অকালমৃত্যু বলে তাকে।

কৈশরের রস পেতে না পেতে যৌবন এসে উঁকি মারে দ্বারে।

তবুও বলি গরুটা সারাজীবন দড়িতে বাঁধা,

কখনো দড়িটা বাড়ে কমে বা রঙ পালটায়।



যৌবনের স্বাদ যেন অমৃত, কারও বা গরলে ভরা,

দড়ির বাঁধনটা দীর্ঘ ও শক্ত হয় আরও।

যৌবনের মাথায় চড়ে বসে স্বামী বা স্ত্রী নামক টোপর।

বাঁধনের রস্মিটা চলে যায় স্বামী বা স্ত্রীর হাতে।

সে বাঁধন ছেঁড়ার নয় সহজে, শুধু মালিকানা পালটায়।

যৌবন সারাদিন যেথায় ঘুরুক না কেন রাতে ফেরে বাসায়।

গরুটা সারাজীবন দড়িতে বাঁধা,

কখনো দড়িটা বাড়ে কমে বা রঙ পালটায়।



বার্ধক্যের দড়ি বড়ই শিথিল, প্রায় অদৃশ্য।

সে দড়ির মালিক নেই, কেউ মালিকও হতে চায় না।

তাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠালেও অভ্যাসে মনের বাঁধন থেকে যায়।

গরুটা সারাজীবন দড়িতে বাঁধা,

কখনো দড়িটা বাড়ে কমে বা রঙ পালটায়।



তারাপদ মাঝি

১২/১১/২০১৬




কোন মন্তব্য নেই

গল্প বা কবিতা কেমন লাগলো তা জানাতে ভুলবেন না

Blogger দ্বারা পরিচালিত.