অপেক্ষা



অপেক্ষা

বসেছি প্লাটফর্মে নিঃসঙ্গ বড় একা।
চারিদিকে ইতঃস্তত লোকের আনাগোনা,
কখনো হকারের চিৎকারে কান পাতা দায়।
ওদিকে যুবতী এক যুবকের সঙ্গে বাক্যালাপে মত্ত,
কি কথা হয় কে জানে? হয়তো প্রেমালাপে রত।

কিছু যুবক এক বিকলাঙ্গের সঙ্গে তামাসায় রত,
তাকে দেখলে মনে হবে অঙ্গ তার এক’শ ভাগ বিকল,
অন্তত আমি এতদিন তাই জানতাম।
প্রতিদিন ট্রেনে যাতায়াতের সময় সে ট্রলিতে চেপে,
আমাদের কাছে কাতর মিনতিসহ ভিক্ষা চায়।
কিন্তু আজ দেখলাম ততটা বিকলাঙ্গ সে নয়,
তবে খেটে খাওয়ার মতো শক্তসমর্থও নয়।

পর পর স্টেশনে লোকসংখ্যা বাড়ে।
রোজকারের মতো আজও মাইকে ঘোষিত হয়
ট্রেনখানা লক্ষ্মীকান্তপুর থেকে শিলাইদহে যাবে।
সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনির শেষে সূর্যিমামা ফিরলেন গৃহে।
তার ভার বুঝে নিল দেমাকী বিজলীবাতি,
যাদুকাঠির পরশে পরিবেশখানা মোহময় হলো।

বসেছি চা দোকানের পাশে।
দুই জাতির লোকেরাই একত্র চা পানে রত।
তাদের মধ্যে বাক্যালাপ চলে নোট বাতিল নিয়ে,
কেউ বলে কাজটা ভালো, কেউ বলে খারাপ।
কথায় কথা বাড়ে, ভালো মন্দের বিচার শেষ হয় না।
ইতিমধ্যে সবুজ বাতি জ্বলে গেছে।
কর্কশ ভেঁপু বাজিয়ে ট্রেন চললো ছুটে।
প্লাটফর্ম আবার ফাঁকা হলো।
মরুভুমির মরুদ্যানের মতো প্রত্যেকটি দোকানে
কিছু কিছু মানুষ বসে আছে।
কেউ কেউ তাসের আড্ডায় রত।
আমি শুধু একা নিঃসঙ্গ,
প্রিয়ার পিয়াসে ট্রেনের আশায় বসে।

তারাপদ মাঝি
লক্ষ্মীকান্তপুর
৩০/১১/২০১৬

কোন মন্তব্য নেই

গল্প বা কবিতা কেমন লাগলো তা জানাতে ভুলবেন না

Blogger দ্বারা পরিচালিত.