একুশে ফেব্রুয়ারী

একুশে ফেব্রুয়ারী
তারাপদ মাঝি
আজ একুশে ফেব্রুয়ারী।
বাঙ্গলা ভাষা মর্যাদা রক্ষার জন্য
বাংলাদেশে রক্তক্ষয়ী আন্দোলন হয়েছিল।
সহীদদের জানাই আন্তরিক ভালোবাসা শুভেচ্ছা।
তারা লড়াই করেছিল বাংলাভাষা প্রতিষ্ঠার স্বার্থে।
আমিও বাঙালী।
বাঙলা আমার মাতৃভাষা, আমার গর্ব।
তবুও একুশের ভাষা আন্দোলনে আমি গর্বিত নই।
কারণ এটা আমার আন্দোলন ছিল না।
এটা বাংলাদেশের নাগরিকের সার্বিক আন্দোলন।
সেই আন্দোলনকে আমি পুর্নসমর্থন করি,
কিন্তু আন্দোলনে একটুও গর্ববোধ করি না।
বরং এই আন্দোলনের স্মৃতি আমাকে আঘাত করে।
ভারতের শত ভাষার মাঝে বাঙলা হারিয়ে যায় নি।
বাংলাভাষা আছে বাংলার জায়গায়।
তাকে এখনও পর্যন্ত কোন আন্দোলনে দাঁড়াতে হয় নি।
ঝরে নি একটুও তাজা রক্ত।
উনিশশো সাতচল্লিশ সালের পরে
একুশের আন্দোলনকারীরা কেন ভারত ভূখন্ডে
যুক্ত থাকতে চায় নি।
কেন ভিড়েছিল বর্বর পাকিস্থানের সঙ্গে!
কেন বাংলা মায়ের অঙ্গছেদ মেনেছিল তারা?
আজও উত্তর মেলেনি তার।
উত্তর হয়তো আছে,
কিন্তু দেওয়ার সাহস মেলেনি আজও।
আজকের দিনের কোন অনুভূতি আমার নেই।
কোন গর্ববোধও নেই।
সে ব্যথা কি ভুলতে পারি!
আমারই বংশধর ওপার বাংলা ছেড়ে
বাড়ীঘর জমিজিরেত ছেড়ে চলে আসে এপারে।
আজও তাদের হাহাকার শুনি।
কেউ শোনায় ফরিদপুর,পাবনা,রংপুরের কথা,
আবার কেউ শোনায় নারায়নগঞ্জ,চাঁটগাঁ যশোরের কথা।
চোখের জল আজও শুকায়নি।
যদি সেদিন তারা ভারতে থাকার বাসনা করতো,
একুশে ফেব্রুয়ারী জন্ম নিত না।
তাই একুশে ফেব্রুয়ারী তোমায় সেলাম করি।
কিন্তু তোমার গরিমায় গর্বিত নই।
এপারের যারা গর্বিত হয়,
তারা এখনও ভারতীয় হয় নি।
দেবনগর
২১/০২/১৮

কোন মন্তব্য নেই

গল্প বা কবিতা কেমন লাগলো তা জানাতে ভুলবেন না

Blogger দ্বারা পরিচালিত.