পুনরাবৃত্তি
ছুটি গেছে ছুটে,
আবার অফিস যাওয়া হলো শুরু৷
ঠিক সাতটায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে
সময় মতো নামখানা স্টেশনে পৌছানো
গেল৷
আগের মতোই ট্রেনতুতো ভাইপো হাজির৷
খানিক পরে সদ্য ভাব হওয়া অভিন্ন
হৃদয়
সুর্য এসে মিলিত হলো মিনমিনে তারার
সঙ্গে৷
ট্রেন ছুটে চলেছে৷
নিত্য দিনের মতো মাষ্টারদা উঠলো
কাকদ্বীপে৷
করঞ্জলীতে উঠলো আমাদের প্রিয়
সুপ্রিয়দা৷
তারপরে লক্ষ্মীকান্তপুরে পৌছালে
ইদানিং
কমিউনিষ্ট গদাধরের সঙ্গে আসে
সুপ্রভাত৷
সুপ্রভাত মুচকি হেঁসে আমাদের
সুপ্রভাত জানায়৷
তারপর আরও ওঠে অনেকে৷
সবাই ট্রেনতুতো দাদা বা কাকা অথবা
ভাই৷
এতোক্ষন সমীরণ ছেলেটা বেশ ফাকা
ট্রেনে খেলছিল৷
এখন মানুষের ভিড়ে সে এখন জালনিবদ্ধ
রোহিত৷
একে একে মথুরাপুর,
জয়নগর,
বারাসত আসে৷
মানুষের গাড়ত্ব আরও বৃদ্ধি পেতে
থাকে৷
তারপর হোগলায় ঝুপ করে নেমে পড়ি৷
নেমেই দেখি টেলারিং দোকানের সামনে
সরবেড়িয়ার মাষ্টার মশাই আমার
অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে৷
দু'মিনিটের পথ একসাথে যাওয়া৷
তারপর আমি যাবো পদব্রজে আর উনি
দ্বিচক্রযানে,
তবুও আমার জন্য অপেক্ষা করা!
একেই কি বলে হৃদয়ের টান মাটির মায়া!
হয়তো বা তাই৷
তারপর এগিয়ে যেতে দেখি সেই
দিদিটাকে৷
উনার বয়স প্রায় বাহান্ন বা আঠান্ন৷
পরনে প্রায় আটপৌরে শাড়ী,
একেবারে সাধারণ৷
বিকলাঙ্গ,
তাই একটু খুঁড়িয়ে হাটেন৷
সঙ্গে আরও জনা পাচেক মেয়ে৷
সবাই একই স্কুলের শিক্ষিকা বলে
ড্রেস একই৷
তাদের সঙ্গে আমার কোনদিন পরিচয় হয়
নি,
কিন্তু আমায় দেখে তারা মুচকী হাসি
হাসে৷
আমিও বিনিময়ে হাসি দিয়ে তাদের পাশ
কাটিয়ে
এগিয়ে চলি দ্রুত পায়ে৷
দেখি মাংসের দোকানে আগের মতো সেই
মহিলা৷
দোকানে তার বড় বড় মংসের খন্ড
ঝোলানো৷
কি মাংস কে জানে!
হয়তো গরু বা মোষের মংস হবে৷
রাস্তায় আসতেই দেখি দিদিমনি
দাঁড়িয়ে৷
আমাকে দেখেই তিনি একটি মিষ্টি হাসি
দেন,
এটাই কুশল বিনিময়ের ইশারা,
তাই জবাবে আমার ঠোঁটে খেলে যায়
হাসি৷
অটো ধরে অফিসে পৌছালে দেখি একদল
ছেলে-
তাদের হাতে একটিকরে মোবাই ফোন,
অবশ্যই অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সেরা
জাত৷
জাতির ভবিষ্যত একটি খাঁচায় বন্দী!
তাদের স্বাগত জানিয়ে অফিস যাওয়ার
পর্ব করি শেষ- জীবনের রস আহরনের
শুরু৷
কপি রাইট@
তারাপদ মাঝি
দেবনগর
১৫/১০/১৮
Leave a Comment