#জিজ্ঞাসা

মেয়েটি রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেছে খুব সচেতন ভাবে।
নিটোল শরীরের ভাষায় ফুটে উঠেছে আত্মনির্ভরতার সুষ্পষ্ট প্রতিচ্ছবি।
তার শরীরের লাবন্য খুব কম নয় জেনো?
মাঝারী উচ্চতার শ্যামলা রঙের মেয়েটির মাথায়
কালবৈশাখীর ঘন মেঘরঙা একমাথা লতানো চিকুর
মহাদেবের স্কন্ধ থেকে ফণী পুচ্ছের মতো লক্ পক্ করছে।
শরীরে লেপটানো পরিধানে আভরণহীন হয়েও
শুধু দুই টিলার সৌন্দর্য্যে সে হয়ে উঠেছে অপরুপা।
মেয়েটি অষ্টাদশ অতিক্রম করেও বধূ হয়ে ওঠে নি।
এখনো পিত্রালয়ে অনূঢ়া অভাগিনী সংসারের জোয়াল টানে!
তাই কি প্রকাশ্য দিবালোকে জনাকীর্ন রাজপথে শির পরে
গৃহের ফলানো সব্জি ফেরি করে!
খদ্দেরের জ্বালায় মেয়েটি একসময় পথপার্শ্বে
নীড় ছায়ে সব্জির পসরা নিয়ে বসে।
অর্কের খর তাপে শোষিত শরীর যেন গ্রীস্মের ফুটিফাটা মাঠ!
প্রশ্বাস বায়ু অভাবে বুকটা হাপরের মতো বায়ু পান করে।
খদ্দেরগুলোর সেদিকে খেয়াল নেই একটুও।
মেয়েটি বোঝে যে সব্জির পসরায় সেও পন্য হয়ে গেছে।
খদ্দেররা তাই সব্জি নাড়া চাড়ার সাথে তাকেও একটু পরখ করে
যেন গাভিরে পরখ করে কামোন্মত্ত বৃষ!
আমি ভাবি।
স্মৃতির পাতায় ইতিহাসের পৃষ্ঠাগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ি,
নারী কি মহাভারতের দ্যূত ক্রীড়া থেকে আজ পর্যন্ত ভোগের সামগ্রী!
সোনা টাকা কড়ি ঘটি বাটির মতো নারীরা কি লুন্ঠনের সামগ্রী হয়ে রবে!
আমার মা বোন স্ত্রী কন্যা তারাও!
এ ধরণীতে নারীর মর্যাদা আর কবে সুরক্ষিত হবে?
সকলের কাছে এ আমার সরল জিজ্ঞাসা।
কপিরাইট@তারাপদ মাঝি
১৫ই মে, শুক্রবার
দেবনগর।

কোন মন্তব্য নেই

গল্প বা কবিতা কেমন লাগলো তা জানাতে ভুলবেন না

Blogger দ্বারা পরিচালিত.